Skip to content

কেন সার্ভিস চার্জ প্রয়োজন জিপিএস ট্র্যাকারে?

Image Loading

একটা ছোট উদাহরণ দিয়ে শুরু করি, আপনি একটা মোটরবাইক কিনলেন। সেটা কিন্তু রেগুলার সার্ভিসিং এ রাখতে হয়। মেইনটেন্যান্স করতে হয়। আপনি একবার একটা বাইক কিনে আনলেন তারপর সারাজীবন শুধু ফুয়েল লোড করবেন এবং ব্যবহার করবেন এমনটা কিন্তু হয় না। জিপিএস ট্র্যাকিং সার্ভিসটাও অল অ্যাবাউট সার্ভিস।

তাছাড়া ট্র্যাকিং মানে যে শুধু লোকেশন ট্র্যাক করা তা কিন্তু না, বাইক বা গাড়ির তেলের খরচ, মাইলেজের হিসাব, স্পিড রিপোর্ট, ইঞ্জিন এর অবস্থা সহ আরও অনেক কিছুই নজরে রাখা যায় এই ট্র্যাকিং সার্ভিসগুলোর মাধ্যমে। আর শখের বা লাখ টাকার গাড়ির নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভালো মানের সার্ভিস তো প্রয়োজনই, আর সার্ভিসের সেই মান নিশ্চিত করতেই নেয়া হয় সার্ভিস চার্জ। যে যত বেশি টাকা নিচ্ছে সে কিন্তু তত ভালো সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কি কি সার্ভিস থাকতে পারে জিপিএস ট্র্যাকারেঃ

আফটার সেলস সার্ভিসঃ

জিপিএস ট্র্যাকার যখন তার ক্লায়েন্টদের জন্য আফটার সেলস সেবাটা নিশ্চিত করছে তখন তাদের সে সেবার জন্য আলাদা টেকনেশিয়ানের প্রয়োজন হয়, যারা দক্ষতার সাথে কাজ করবে। আপনার লাখ টাকার গাড়িতে দক্ষ টেকনেশিয়ান দ্বারা ইন্সটলেশন বা কোন কাজ করানো হলে, গাড়ির ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে কোন চিন্তা করা লাগছে না। এমন কি কোন তথ্য জানতে বা কোন সমস্যা দেখা দিলে দক্ষ এমপ্লয়িদের মাধ্যমে তা সমাধান করা হয়। এই ধরণের সেবা নিশ্চিত করতেই মূলত সার্ভিস চার্জ নেওয়া হয়ে থাকে। 

কাস্টমার সার্ভিস টিমঃ

আমরা যদি আমাদের দেশের মোবাইল সার্ভিস অপারেটরগুলোর দিকে নজর দেই, কোন ইস্যু হলে সাথে সাথে তাদের কাস্টমার যোগাযোগ করতে পারছি, কথা বলতে পারছি। ঠিক তেমনি ট্র্যাকারের ক্ষেত্রেও যেকোন ইস্যু আসতেই পারে। কিন্তু সেটা যদি সমাধান না করা যায় তাহলে চিন্তার বিষয়, গাড়ির সুরক্ষা বিঘ্নিত হবে। সেক্ষেত্রে ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ারের পরিষেবাটাই আপনার ভালো একটা সার্ভিস নিশ্চিত করছে।

সার্ভার ব্যয়ঃ

সার্ভিস চার্জ নেওয়ার আরেকটা বড় কারণ হয়ে থাকে সার্ভারের ব্যয়। যে সকল কোম্পানিগুলো নিজেদের সার্ভার মেইনটেনেন্স করে এবং রিয়েল টাইম ডাটা কালেক্ট করে ক্লায়েন্টদের মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েব অ্যাপে পাঠায়, তাদের সেই ডাটাগুলো সংরক্ষণ এবং সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে প্রতিমাসে কিন্তু একটা ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। অনেকে আবার নামমাত্র মূল্যে সার্ভার ব্যবহার করে সেই খরচটা বাঁচিয়ে ফেলে। তবে সেক্ষেত্রে তারা আপনার সার্ভিস চার্জের খরচ বাঁচালেও তথ্যচুরির একটা বড় ঝুঁকি থেকে যায়।

গুগল ম্যাপের এক্সেসঃ

আমরা সাধারণত মোবাইলে যে ম্যাপ ব্যবহার করি তার জন্য আলাদা কোন পে করতে হয় না। তবে এন্টারপ্রাইজ লেভেলে ট্র্যাকিং এ এক্সেসের জন্য গুগলকে আলাদাভাবে বেশ ভালো অংকের টাকা দিতে হয় প্রতি বছরে। গাড়ির সঠিক লোকেশন ট্র্যাকের ক্ষেত্রে ঐ ম্যাপের এক্সেসটা অনিবার্য। নাহলে আপনি আপনার গাড়ির সঠিক লোকেশনেই পাবেন না। তাহলে এরকম মানের সার্ভিসের ক্ষেত্রে চার্জ প্রযোজ্য হওয়াটা স্বাভাবিক নয় কি?

ডাটা প্যাক রিনিউঃ

জিপিএস ট্র্যাকারে যেহেতু সিম লাগানো থাকে এবং প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ Data প্রয়োজন পড়ে তাই সেটা টাকা দিয়েই কিনতে হয়। যারা ফ্রি-তে সেবাটা দেয় তাদের এ নিয়ে মাথাব্যথা থাকে না। কিন্তু যারা সার্ভিস চার্জ যারা নিচ্ছে তারা সেই সার্ভিসের চার্জে মধ্যেই প্রতিমাসের এই ডাটাপ্যাক ইনক্লুড করে দেয় এবং নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবার বিষয়টা নিশ্চিত করে ফলে ট্র্যাকিং সেবাও থাকে সুনিশ্চিত।

গাড়ি উদ্ধারে সহায়তাঃ

দেখা গেল রাতে আপনার গাড়িটা চুরি হয়ে গেল। আপনি যতক্ষণে টের পেলেন দেখলেন গাড়ি অনেকদূর অথবা আপনি আপনার মোবাইলে গাড়িই দেখতে পারছেন না। হন্তদন্ত হয়ে যেখান থেকে ডিভাইস নিয়েছেন সেখানে যোগাযোগের চেষ্টা করলেন কিন্তু কোন সাড়া পেলেন না। সকাল হতে হতে চোর ডিভাইস খুলে গাড়ির চেহারাই পাল্টে দিল। কিন্তু যখন সার্ভিস চার্জ দিবেন তখন সেই প্রতিষ্ঠান কিন্তু প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে, প্রয়োজনে স্থানীয় পুলিশের সহায়তা নেয় এবং আপনাকে সেরা সেবাটা দেওয়ার চেষ্টা করে। আপনার গাড়ি উদ্ধারে যাবতীয় পদক্ষেপ তারাই নিয়ে থাকে।

ডাটা ব্যাকআপ সুবিধাঃ

ব্যক্তিগত কিংবা কর্পোরেট কাজে অনেক সময় গাড়ির ডাটা ব্যাকআপের দরকার হয়। একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাস্টমারদের ডাটা সংরক্ষণ রাখা হয়ে থাকে। যেটা ফ্রি তে আপনি কোথাও পাবেন না। কিন্তু যখন সার্ভিস চার্জটা দিচ্ছেন তখন এই সুবিধাটাও দিয়ে থাকে ট্র্যাকিং কোম্পানিগুলো। আবার অনেকে সার্ভিস চার্জ কম রেখে এগুলো উহ্য রাখে।   

নিজস্ব ওয়েব অ্যাপ/মোবাইল অ্যাপঃ

কোম্পানিগুলো নিজস্ব ওয়েব এপ্লিকেশন এবং মোবাইল এপ্লিকেশন প্রোভাইড করলে তার ডেভেলপমেন্টের জন্য Cost ইস্যু থাকে। সেটা মেইনটেনেন্স করা , নিত্য নতুন ফিচার নিয়ে কাজ করা যেটা আসলে অন্য কোন থার্ড পার্টি সফটওয়্যারে করা সম্ভব হয় না। সেখানে তারা সার্ভিস চার্জের ব্যাপারটা ফাঁকি দিতে পারে, যেটা অন্যরা করতে পারে না।  

বাজারে অনেক ধরণের জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইস পাওয়া যায়। সার্ভিস চার্জের উপর সার্ভিসের মানটা নির্ভর করে আসলে। যে যত বেশি সার্ভিস দিচ্ছে সে সেই অনুয়ায়ী চার্জ রাখার চেষ্টা করে। ডিভাইস কেনার আগে নিশ্চিত হয়ে নিবেন আপনি আপনার সব সুবিধা পাচ্ছেন কিনা। এমনটা যেন নাহয় কিছু টাকা সার্ভিস চার্জ বাঁচাতে গিয়ে সেরা সার্ভিসটা মিস করে ফেলছেন। আপনি যদি জিপিএস ট্র্যাকিং এর সম্পূর্ণ সার্ভিস পেতে চান তাহলে অবশ্যই সার্ভিস চার্জ দিয়ে সেটা ব্যবহার করতে হবে।

গাড়ির নিরাপত্তায় ফাইন্ডার সম্পর্কে জানতে
গাড়ির নিরাপত্তায় ফাইন্ডার সম্পর্কে জানতে