Skip to content

ব্রেক ইন পিরিয়ড কেন বাইক এর জন্য প্রয়োজন?

নতুন বাইক কেনার পর বাইকের পার্টসগুলোও নতুন থাকে,সেজন্য একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিশেষ কিছু নিয়ম এবং মাইলেজে বাইকটিকে চালালে পার্টসগুলো ঠিকঠাক এডজাস্ট হয়ে যায়। এই নির্দিষ্ট সময় বা মাইলেজ পর্যন্ত বাইকটিকে চালানোর সময়কালকে বলা হয় ‘ব্রেক ইন পিরিয়ড’। 

যখন নতুন বাইক কিনবেন সেটার প্রতি ভালোবাসা থেকে প্রতিদিন এই বাইকের সকল ধরনের যত্ন আপনি নিবেন। ভালো ইঞ্জিন অয়েল এবং জ্বালানি ব্যবহারের পর আপনার বাইককে মনের খুশি মত চালাতে কার না ইচ্ছা করে। তবে নতুন বাইক একটা নতুন শিশুর মত। নতুন শিশু যেরকম আস্তে আস্তে হাঁটা শেখে, নতুন বাইকের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একইরকম। বাইক পেয়েই উরাধুরা চালালে কয়দিন পর বাইক নিয়ে টেকনিশিয়ানের কাছে দৌড়ানো লাগবে। এখন এই বিড়ম্বনায় যাতে না পড়তে হয় সেজন্য জানা দরকার ব্রেক ইন পিরিয়ড।

ব্রেক ইন পিরিয়ড কি?

বাইক বানানোর সময় ইঞ্জিনের যে পার্টস আসছে সেগুলাকে অনেক নিখুঁতভাবে লাগানো হয়। তারপরের অনেক পার্টস মসৃণ থাকে না, যেমন বাইকের টায়ার, পিস্টন, ব্রেক, ড্রাইভ চেঞ্জ। এই যন্ত্রাংশগুলোকে মসৃণ করার জন্য বাইকটিকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চালাতে হয়। এই সময়টাকে ব্রেক ইন পিরিয়ড বলে।
বাংলাদেশে সাধারণত ইন্ডিয়ান, চাইনিজ, জাপানি এবং ইতালিয়ান মোটরসাইকেল বেশি পাওয়া যায়। এখন সব বাইকের ব্রেক ইন পিরিয়ড আলাদা হয়ে থাকে। আলাদা হলেও প্রধান বিষয়গুলো সব বাইকের ক্ষেত্রে একই।
বাইক কেনার সময় একটি ম্যানুয়াল বুক দেয়া হয় যেখানে ব্রেক ইন পিরিয়ডের নিয়মাবলী দেয়া থাকে। না দেয়া থাকলে টেকনিশিয়ানের কাছ থেকে নিয়মসমূহ জেনে নিতে পারেন। মূলত সকল বাইকের ব্রেক ইন পিরিয়ড নূন্যতম ১০০০ কি.মি হয়ে থাকে। তবে এক্সপার্টরা বলেন যে যত বেশি মাইলেজ রাখা যায় তাহলে বাইকের ইঞ্জিন ভালো থাকে এবং ইঞ্জিন পরিপক্কতা পায়। 

যে যে নিয়ম মেনে চলা উচিত

ব্রেক ইন পিরিয়ড কে বেশিরভাগ দুই ভাগে ভাগ করে নেয় ০ থেকে ৫০০ কি.মি. এবং ৫০১ থেকে ১০০০ কি.মি. পর্যন্ত। এই সময় বাইকের গতি ৪০ থেকে ৬০ এর মধ্যে রাখা উচিৎ, এসময় উচ্চ আরপিএম এ ইঞ্জিন স্টার্ট করা যাবে না।

চলুন জেনে নেয় ব্রেক ইন পিরিয়ডে যে যে নিয়ম মেনে চলা উচিত–

  •  বাইকটি স্টার্ট করে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন যাতে ইঞ্জিন অয়েল সঠিকভাবে ইঞ্জিন এ পৌছে।
  • বাইকের স্পিড ৬০ কি:মি:/ঘন্টা এর মধ্যে রাখুন।
  • আরপিএম ৬৫০০ এর নিচে রাখতে হবে, উচ্চ আরপিএম একদমই নেয়া যাবে না। 
  • প্রথমবার ৩০০ থেকে ৪০০ কিমি চালানোর পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন এবং পরবর্তিতে ৮০০ থেকে ১০০০ কিমি চালানোর পর দ্বিতীয় বার ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন। সম্ভব হলে অয়েল ফিল্টারটিও পরিবর্তন করে ফেলুন।
  • নতুন বাইক একটানা বেশি গতিতে চালাবেন না এবং সর্বোচ্চ থ্রটল ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
  • ব্রেক-ইন পিরিয়ড এর সময় মিনেরাল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন, সিনথেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার না করাই ভালো।
  • প্রথম ৫০০ কি:মি:, একটি গিয়ারে কোনক্রমেই আরপিএম ৪৫০০ অতিক্রম করবেন না আবার বেশি গিয়ারে কম আরপিএম এ চালানো যাবে না। এতে ইঞ্জিনের উপর চাপ বাড়ে।
  • ব্রেক ইন পিরিয়ড এ লং ট্যুর না করাই ভালো এবং ৩০ মিনিট পর পর থেমে থেমে চালানো উচিত। এতে ইঞ্জিন ঠান্ডা হওয়ার সময় পাবে।
  • ব্রেক ইন পিরিয়ড চলার সময় চেষ্টা করবেন পিলিয়ন (সহযাত্রী) না নিতে আর নিলেও কম ওজনের পিলিয়ন নিন।
  • একটানা চালানোর সময় বেশি ব্রেক ধরা থেকে বিরত থাকুন এই সময় গতি কমানোর জন্য থ্রটল ব্যাবহার করুন।

ব্রেক ইন পিরিয়ডের সময় জ্বালানি হিসেবে পেট্রোল অথবা অকটেন ব্যবহার করা ভালো। নকিং নাম্বার দেখে জ্বালানি নেয়া উচিৎ। এতে ইঞ্জিন ভালো থাকে। ব্রেক ইন পিরিয়ড নতুন বাইকের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই সময়টাতে যত্ন সহকারে চালালে বাইকের ইঞ্জিন সহ বাকি পার্টস সব ঠিকঠাক এডজাস্ট হয়ে যাবে এবং বাইক দীর্ঘস্থায়ী ভাবে ভালো থাকবে।

গাড়ির নিরাপত্তায় ফাইন্ডার সম্পর্কে জানতে
গাড়ির নিরাপত্তায় ফাইন্ডার সম্পর্কে জানতে