কখনো যুদ্ধের ময়দানে, কখনো আবার সিনেমার পর্দায় দাপিয়ে বেড়িয়েছে তার শক্তিশালী ইঞ্জিন আর রাজকীয় লুক নিয়ে। সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র ইংল্যান্ডে ১৯০১ সালে যাত্রা শুরু করলেও এতদিনেও জনপ্রিয়তা বিন্দুমাত্রও কমেনি বাজারে। অধিক সিসির শক্তিশালী ইঞ্জিন, দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্স আর ক্লাসিক স্টাইলিশ লুক সহজে বাইক প্রেমীদের মনে জায়গা করে নেয় “রয়্যাল এনফিল্ড”।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ১৯৪৯ সালে ৩৫০ সিসির এনফিল্ড প্রবেশ করলেও আমাদের দেশে এতদিন ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে ২০২৪ এ হলেও বাংলাদেশের বাজারে ধরা দিচ্ছে রয়্যাল এনফিল্ড। আজ থেকে দেশীয় অটোমোবাইল প্রতিষ্ঠান ইফাদ মটরস লিমিটেড বাজারে নিয়ে আসছে এই আইকনিক ব্র্যান্ডের মোটরবাইকটি। ৩৫০ সিসির মডেল- হান্টার, বুলেট, ক্লাসিক আর মিটিওর পাওয়া যাবে দেশীয় বাজারে।
ব্লগে কোনটার কত দাম এবং কেন সেরা পছন্দ হতে পারে তা নিয়েই বিশদ আলোচনা করব। অন্যান্য ব্র্যান্ডের বাইকের তুলনায় দাম খানিকটা বেশি হলেও রাইডারদের জন্য হতে পারে সেরা পছন্দ। চলুন জেনে নেওয়া যাক কেন?
১. ঐতিহ্যবাহী ও ক্লাসিক ডিজাইন
রয়্যাল এনফিল্ডের ক্লাসিক লুক আর রেট্রো স্টাইল তার জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে। সবগুলো মডেলেই আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া রেখে ঐতিহ্যবাহী লুক বজায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে। এনফিল্ডের “বুলেট” এবং “ক্লাসিক” মডেলগুলো রাইডারদের কাছে জনপ্রিয়। যারা ঐতিহ্যবাহী ও ক্লাসিক লুকের বাইক পছন্দ করেন, তাদের জন্য রয়্যাল এনফিল্ড একটি আইকনিক পছন্দ। যা শহরের রাস্তায় একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য তৈরি করবে।
২. শক্তিশালী ইঞ্জিন ও পারফরম্যান্স
রয়্যাল এনফিল্ড তার শক্তিশালী ইঞ্জিনের জন্য আলাদাভাবে সমাদৃত। শক্তিশালী ইঞ্জিনের সাথে নির্ভরযোগ্য পারফরম্যান্স অন্য মাত্রা যোগ করে থাকে বাইকগুলো। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মফস্বলের কাঁচা রাস্তা থেকে দীর্ঘ হাইওয়ে এনফিল্ডের ইঞ্জিন চমৎকার পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম হবে। এর সুরেলা সাউন্ডও আলাদা আনন্দ যোগ করে রাইডারদের মনে। চ্যালেঞ্জিং লং ড্রাইভ এবং অ্যাডভেঞ্চারের জন্য দুর্দান্ত সঙ্গী হতে পারে বাইকগুলো।
৩. রাইডিংয়ের আরাম এবং স্থায়িত্ব
বাংলাদেশের রাস্তায় চলাচলের জন্য রাইডিং এর আরাম একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। এদিকে রয়্যাল এনফিল্ডের বাইকগুলো রাইডিংয়ের আরাম এবং স্থায়িত্বের জন্যও বিখ্যাত। বাইকগুলোর সিটিং পজিশন এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে দীর্ঘ রাইডেও রাইডার আরাম অনুভব করেন। এর মজবুত চেসিস ডিজাইন অনেক কঠিন রাস্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম হয়ে থাকে।
৫. মজবুত এবং দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্স
মজবুত নির্মাণশৈলী এবং দীর্ঘস্থায়ী টেকসই পারফরম্যান্সের জন্য বিশেষভাবে সুপরিচিত রয়্যাল এনফিল্ডের বাইকগুলো। যা দীর্ঘ রাইডিংয়ের পরেও কোনো বড় সমস্যার সম্মুখীন হয় না। মোটরসাইকেলগুলো সহজেই যেকোন রাস্তা এবং আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নিতে সক্ষম থাকে। দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্স এবং মজবুত চেসিসের কারণে এটি বাংলাদেশের বাইকপ্রেমীদের জন্য বাড়তি সুবিধা হতে পারে।
৬. বাইকিং কমিউনিটি এবং ইভেন্ট
বিশ্বজুড়ে রয়্যাল এনফিল্ডের রাইডারদের জন্য বড় কমিউনিটি রয়েছে। তারা সেখানে নিয়মিত রাইডিং ইভেন্ট, ট্যুর ইত্যাদি আয়োজন করে থাকে। যারা বাইকগুলো চালিয়ে থাকেন তারা ঐ কমিউনিটির অংশ হয়ে থাকেন। এছাড়াও সেখানে রাইডাররা নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে এবং একটা মধ্যে একটা বন্ধন সৃষ্টি হয়ে থাকে।
কোন মডেলের কত দাম:
বাইক কেনার সামর্থ্য থাকুক আর না থাকুক একটু রুচিশীল মানুষ হলেই আপনার শখের জিনিসের তালিকায় নাম উঠে যাবে রয়্যাল এনফিল্ডের। তবে দেশীয় বাজারের দিকে নজর রেখেই দাম রাখা হয়েছে বাইকগুলোর।
হান্টার ৩৫০- এর দাম শুরু ৩লাখ ৪০ হাজার থেকে। রঙের উপর দামের তারতম্য হতে পারে কিছুটা। ক্লাসিক ৩৫০-এর দাম শুরু ৪লাখ ৫হাজার থেকে। বুলেট ৩৫০-এর দাম শুরু ৪ লাখ ১০ হাজার থেকে। মিটিওর ৩৫০- এর দাম শুরু ৪লাখ ৩৫ হাজার টাকা থেকে। ২২ অক্টোবর সকাল থেকে প্রি-বুকিং শুরু হবে মোটরসাইকেলগুলোর এবং ৪৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি শুরু করবে কোম্পানিটি।
অ্যাডভেঞ্চার রাইডিং থেকে শুরু করে দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য, রয়্যাল এনফিল্ড বাংলাদেশীদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা দিবে। এটি শুধু যাতায়াতের মাধ্যম হবে না বরং স্টাইল এবং অ্যাডভেঞ্চারের অংশ হতে যাচ্ছে। বাজারে রয়্যাল এনফিল্ডের প্রবেশ বাইকারদের জন্য বড় সুখবরই বলা চলে। যারা ক্লাসিক লুক এবং শক্তিশালী পারফরম্যান্সের একটি বাইক খুঁজছেন, তাদের জন্য রয়্যাল এনফিল্ড নিঃসন্দেহে একটি সেরা পছন্দ।