আমাদের দেশে Logistic কোম্পানিগুলোর প্রধান লক্ষ্য হয়ে থাকে ফ্লিট পরিচালনায় কিভাবে কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং সহজ করা যায়। পরিবহন, ডেলিভারি দ্রুত এবং কম খরচে নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একে অপরের সাথে পাল্লা দিয়ে কাজ করে। এক্ষেত্রে GPS ট্র্যাকিং রিয়েল টাইম ডাটা সংগ্রহ করে, ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট সহজ এবং কার্যকর করে থাকে। প্রতিটি যানবাহনের লাইভ লোকেশন নির্ণয়, রুট অপ্টিমাইজেশন, ফুয়েল মনিটরিং, ট্র্যাফিক আপডেট, ড্রাইভিং বিহেভিয়ার সব কিছুই GPS Tracking প্রযুক্তি দিয়ে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। এছাড়াও সরাসরি রিপোর্টও দেখার সুবিধাও পাওয়া যায়, যা দেখে যেকোন সিদ্ধান্ত নিতেও সহজ হয়। চলুন আরও বিস্তারিত আলোচনা করা যাকঃ
১. রিয়েল-টাইম মনিটরিং ও যানবাহন ব্যবস্থাপনা
যানবাহনের সঠিক অবস্থান জানার সুযোগ করে দেয় রিয়েল টাইম মনিটরিং ফিচার। ফ্লিট ম্যানেজাররা সরাসরি কোম্পানির যেকোন গাড়ির লোকেশন দেখতে পারেন। গাড়ি কখন গ্যারেজ থেকে বের হচ্ছে, কখন নির্ধারিত স্থানে পৌঁছাচ্ছে তা দেখতে পারেন। কোন কারণে কোন গাড়ি দেরিতে পৌঁছালে আলাদা করে ড্রাইভারের কাছ থেকে জবাবদিহিতার সুবিধা পান। অনুমোদিত রুটের বাইরে গেলে তাৎক্ষণিক নোটিফিকেশন পাওয়া যায়। যানবাহন চুরি হলেও ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে দ্রুত পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়।
২. রুট অপ্টিমাইজেশন ও সময় ব্যবস্থাপনা
ফ্লিটে রুট অপটিমাইজেশন জন্য GPS ট্র্যাকার বিশেষভাবে কাজে দেয়। দেখা যায় যানজট, অনিয়ন্ত্রিত স্টপেজ, দীর্ঘ বিকল্প রাস্তা এসবে ফ্লিটের ব্যয় বেড়ে যায়। কিন্তু জিপিএস ট্র্যাকারের Data ব্যবহার করে রুট দেখে কোন রুটে যানজট কম তা আগে থেকেই শনাক্ত করে ফেলা যায়। সেই সাথে সংক্ষিপ্ত রুট বেছে নিয়ে দ্রুত ডেলিভারি নিশ্চিত করা যায়। জ্বালানি খরচও তুলনামূলক সাশ্রয়ী হয়ে থাকে।
৩. জ্বালানি ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধি
ফ্লিট পরিচালনায় জ্বালানি(Fuel) সবচেয়ে ব্যয়বহুল উপাদান হয়ে থাকে। গাড়ি চলার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে এই জ্বালানি। আমাদের দেশে ফুয়েল চুরি থেকে শুরু করে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানো, অকারণে অতিরিক্ত ব্রেক করা, ইঞ্জিন চালু রাখা এসব কারণেই থাকে। যার ফলে জ্বালানি খরচের লাগাম টানা এবং সঠিক হিসাব পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। কিন্তু যখন ফুয়েল মনিটরিং করা হয় সাথে ড্রাইভিং বিহেভিয়ার এনালাইসিস করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া তখন সহজেই লাগাম টানা যায় বাড়তি খরচে।
৪. ড্রাইভিং আচরণ পর্যবেক্ষণ ও উন্নতি
GPS ট্র্যাকিং ডিভাইস দিয়ে ড্রাইভারের কর্মদক্ষতা সরাসরি বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়। যেটা ফ্লিট পরিচালনায় খুব কাজে দেয়। ফ্লিট ম্যানেজাররা অফিসে বসেই জানতে পারেন কোন ড্রাইভার কোম্পানির গাড়ির অনুমোদিত গতিসীমা অতিক্রম করছে কিনা, অহেতুক ব্রেকিং এর ডাটাও দেখতে পারেন। আবার সাথে সাথে অ্যালার্টও চলে আসে মোবাইলে। দেখা যায় যেসব গাড়ি অনুমোদিত গতিসীমার বেশি স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে তাদের সবার রিপোর্ট একসাথে পেয়ে যান।
৫. যানবাহনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ
চুরি হওয়া গাড়ি উদ্ধারে GPS ট্র্যাকার খুব কার্যকরী ভূমিকা রেখে চলেছে। চুরি হওয়া গাড়ি ট্র্যাক করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয় ট্র্যাকার দিয়ে। এছাড়া বিপদ আঁচ করতে পারলে কিংবা কোন দূর্ঘটনায় ড্রাইভাররা ইর্মাজেন্সি(SOS) বাটন চেপে জরুরি বার্তা পাঠাতে পারেন। জিও ফেন্সিং দিয়ে নির্দিষ্ট এরিয়া সিলেক্ট করে দেওয়া যায়। যার বাইরে গেলে সাথে সাথে খবর চলে আসে মোবাইলে।
৬. রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন
GPS ট্র্যাকার গাড়ির ইঞ্জিন health, তেল পরিবর্তনের সময়, টায়ারের অবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে আলাদা আলাদাভাবে ডাটা সরবরাহ করে। সময়মতো মেরামত করে ফেললে খরচের মাত্রাও কমে আসে। নিয়মিত নজরদারির ফলে যেমন অতিরিক্ত ক্ষয়ক্ষতির সম্ভবনা কমে তেমনি ব্যয়ের দিকেও সাশ্রয়ী হয়।
বর্তমানে ফ্লিট ম্যানেজমেন্টে GPS ট্র্যাকিং প্রযুক্তি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ট্র্যাকারের মাধ্যমে ফ্লিটের যাবতীয় তথ্য চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। আগের চেয়ে কার্যকারিতাও বেড়ে গেছে বহুগুণে। যেকোন প্রতিষ্ঠানের ফ্লিট পরিচালনার ক্ষেত্রে GPS ট্র্যাকিং সল্যুশন সেরা মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে।