প্রচণ্ড দাবদাহে পুড়ছে দেশ। তাপমাত্রার পারদ ভাঙছে রেকর্ড। অনেক জায়গায় গলছে রাস্তার পিচ। তবুও তো আর থেমে নেই জীবন। উপায় নেই ঘরে বসে থাকার। জীবিকা আর প্রয়োজনের তাগিদে ছুটতেই হচ্ছে বাইরে। এরকম পরিস্থিতে নিজেকে নিয়ে যেমন ভাবি তেমনি ভাবা দরকার আমাদের শখের গাড়িটিকে নিয়েও। নাহলে এটি যেকোন সময় হতে পারে বিকল, ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। শখের গাড়িটির ক্ষেত্রে একটু যত্নবান হলেই এসব বিপত্তি এড়ানো সম্ভব। চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক গরমে গাড়ির যত্নে আমাদের করণীয় কিঃ
গাড়ি ছায়ায় রাখুন
চলন্ত অবস্থায় সূর্যের তাপ গাড়ির খুব একটা ক্ষতি না করলেও রোদে গাড়ি ফেলে রাখলে সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি ঠিকই গাড়ির পেইন্টের ক্ষতি করে। দীর্ঘক্ষণ সরাসরি সূর্য্যের তাপ গাড়ির ভিতর এবং বাহিরের দুদিকের জন্যই ক্ষতিকর। তাই কোথাও গাড়ি নিয়ে গেলে সেখানে গ্যারেজের ব্যবস্থা না থাকলে যতটা সম্ভব গাছের নিচে কিংবা ছায়ায় গাড়ি পার্ক করুন। সম্ভব হলে গাড়ির কাভার সঙ্গে রাখুন যদি কোন ব্যবস্থাই না থাকে, তাহলে যাতে গাড়িটা ঢেকে রাখতে পারেন।
ব্যাটারি পরীক্ষা করুন
গ্রীষ্মের প্রবল তাপ গাড়ির উপর বেশ ভালো প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত তাপ কিংবা ঠান্ডায় গাড়ির ব্যাটারির মধ্যে থাকা রাসায়নিক পদার্থগুলো ঠিকঠাকভাবে কার্যকারিতা ধরে রাখতে পারে না যার ফলে সহজে কর্মক্ষমতা হারায়। আর ব্যাটারির ক্ষতি হলে গাড়ির অবস্থা যতোই ভালো হোক গাড়ির ইঞ্জিন সচল হবে না। তাই দূরে কোথাও যাওয়ার আগে ব্যাটারির অবস্থা চেক করিয়ে নিন। ব্যাটারি তিন বছরের বেশি পুরনো হলে টেকনেশিয়ানের সাথে পরামর্শ করুন। একটু অবহেলা যেন আপনার যাত্রাপথে বিঘ্নের সৃষ্টি না।
লং জার্নিতে চাকায় নাইট্রোজেন রাখুন
উচ্চ তাপমাত্রার কারণে রাস্তাতেও তার প্রভাব পড়ে। রাস্তার পিচ গরম হয়ে থাকে সূর্য্যের তাপে। অনেক সময় তো গলেও যায়। সেক্ষেত্রে সেই তাপ গাড়ির চাকাকেও গরম করে তুলে। অন্যদিকে নাইট্রোজেন ঠান্ডা প্রকৃতির যা গাড়ির চাকার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। সহজে তাপে প্রসারিত বা ঠান্ডায় সংকুচিত হয় না বলে টায়ারের স্থায়ীত্বকাল বাড়ায়। তাই চাকায় সাধারণ হাওয়ার পরিবর্তে নাইট্রোজেন ব্যবহার করতে পারেন। আবার চাইলে নাইট্রোজেন গ্যাসের বাতাসও লাগানো যেতে পারে। তবে আমাদের দেশে এটা এখনো তেমন সহজলভ্য হয়নি এবং বেশ ব্যয়বহুলও। গরমে টায়ারের প্রেসার কিছুটা কমিয়ে রাখা ভালো।
কুল্যান্ট পরীক্ষা করুন
গাড়ির ইঞ্জিনের জন্য কুল্যান্ট খুব দরকারী একটা জিনিস । গাড়ির ইঞ্জিনের কুল্যান্ট তৈরি হয় জল এবং অ্যান্টি-ফ্রিজ উপাদানের মিশ্রণে। ইঞ্জিন যখন অতিরিক্ত গরম হয়ে যায় তখন এই কুল্যান্টেই ইঞ্জিনের শীতলীকরণে প্রধান ভূমিকা রাখে। তাই এই গরমে কুল্যান্টের পরীক্ষা করা বেশ জরুরি। আবার ইঞ্জিন যখন গরম থাকে অনেকেই রেডিওয়েটরের ক্যাপটি খুলে রাখতে চান যেটি একেবারেই কাম্য নয়।
এয়ার কন্ডিশনার পরীক্ষা করুন
শহরের রাস্তায় জ্যাম নিত্যদিনের সঙ্গী। এছাড়া গরমে এসি ছাড়া গাড়িতে বসে থাকা দুরূহ ব্যাপার। গরমে আরামের সঙ্গী এই শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রটিই। যদি কোন কারণে মনে হয় এটি কাজ করছে না দ্রুত কোন অভিজ্ঞ টেকনেশিয়ানের শরণাপন্ন হোন।
গরমে আপনিও নিজের প্রতি যত্নশীল থাকুন আপনার গাড়িটিকেও যত্নে রাখুন। কোন সমস্যা দেখা দিলে হেলা না করে গুরুত্ব দিন। গাড়িতে আপনার প্রতিটা মুহুর্ত নিরাপদ হোক। সুন্দর বাঁচুন।