Skip to content

Login |

সড়কে মরন ফাঁদ – ব্লাইন্ড স্পটঃ কীভাবে ব্লাইন্ড স্পট এড়িয়ে ড্রাইভ করবেন?

আপনার যদি কোন মোটরযান থাকে এবং আপনি নিজেই ড্রাইভ করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনার নিজের ও রাস্তার অন্যান্য যানবাহনের ব্লাইন্ড স্পট সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা উচিৎ। কেননা সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম একটি কারণ ব্লাইন্ড স্পট। সচেতন থাকলে একদিকে আপনি নিজে সুরক্ষিত থাকবেন, অন্যদিকে আপনার যানবাহনের আশপাশে যেসব যানবাহন চলে তারাও নিরাপদে থাকবে। কমে যাবে সড়ক দুর্ঘটনা। 

ব্লাইন্ড স্পট কী?

গাড়ির চালক ড্রাইভিং সিটে বসলে, গাড়ির চারদিকে খুব কাছাকাছি কিছু জায়গা গাড়ি চালানোর সময়ে দেখতে পায় না। কারণ চালক যখন গাড়ি চালান, তখন সে সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালায়। গাড়ির চারপাশের এই জায়গাগুলো তার দৃষ্টিসীমানার বাইরে থেকে যায়। সাইড ও রেয়ার ভিউ মিররের মাধ্যমে কিছু এরিয়া দেখা গেলেও, গাড়ির বডির কারণে অনেক সময় কিছু এরিয়া দৃষ্টি সীমার বাইরে রয়ে যায়। দৃষ্টি সীমার বাইরে থাকা এই স্পটগুলোই মূলত ব্লাইন্ড স্পট। 

প্রাইভেট কার, বাস, বাইক, ট্রাক, জাহাজ এমনকি এরোপ্লেনেরও এক বা একাধিক ব্লাইন্ড-স্পট আছে। যেসব এরিয়ার দিকে একজন চালক, সামনের রাস্তা থেকে চোখ না সরিয়ে অর্থাৎ ঘাড় না ঘুরিয়ে দেখতে পায় না। 

গাড়ির ব্লাইন্ড স্পট

এটি কেন বিপজ্জনক?

ব্লাইন্ড স্পটে কোন যানবাহন থাকলে বা রাস্তার গর্ত, কোন বিপদ আসলে সেগুলো আপনি দেখতে পাবেন না। ফলে এক্সিডেন্টের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। যেমন ধরুন, আপনি ব্লাইন্ড স্পটে থাকা কোন যানবাহনের উপর গাড়ি চালিয়ে দিতে পারেন বা অন্য গাড়ি আপনার  গাড়ির উপর চলে আসতে পারে। 

বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও কার্গো ট্রাকের বেলায় ব্লাইন্ড স্পট জনিত সমস্যা বেশি দেখা যায়। মোটরসাইকেল ছোট আকারের যানবাহন। তাই এরা ট্রাফিকের মধ্যে একেবেকে চলে যেতে পারে। এবং এই কারণে কখন যে ব্লাইন্ড স্পটে চলে আসে বুঝাও যায় না। 

আবার বড় কার্গো ট্রাকগুলো এত বড় হয় যে চালকের পক্ষে এত বড় যানবাহের চারপাশে প্রতি মুহূর্তে লক্ষ্য রাখা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। তাই আপনি যদি কার্গো ট্রাকের ব্লাইন্ড স্পটে পড়ে যান, তাহলে যেকোনো সময়ে ট্রাকটি আপনার উপরে উঠে যেতে পারে বা ধাক্কা দিতে পারে। 

ব্লাইন্ড স্পট কীভাবে এড়াবেন

ম্যানুয়ালি ব্লাইন্ড স্পট চেক করার জন্য এজন ড্রাইভারকে তার ঘাড় ঘুরিয়ে তার গাড়ির চারপাশে দেখে নিতে হয়। এতে করে সামনের দিকে লক্ষ্য রাখা কঠিন। ফলে বিপদও বাড়তে পারে। গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট নেয়ার আগে একবার দেখে নিতে পারলেও, চলন্ত অবস্থায় এইভাবে ব্লাইন্ড স্পট চেক করা কঠিন ও বিপজ্জনক। তবে ড্রাইভারদের জন্য ব্লাইন্ড স্পট কমানোর কিছু পদক্ষেপ আছে।

যদি আপনার গাড়ির পেছনের অংশ এমন কোন বস্তু বা মালামাল থাকে যা আপনার দৃষ্টি সীমাকে ব্যাহত করে, তাহলে এভাবে অতরিক্ত মাল বোঝাই করে গাড়ি চালাবেন না। 

ব্লাইন্ড স্পট এড়ানোর সবচাইতে উত্তম উপায় হলো গাড়ির মিরর সঠিক স্থানে ও সঠিক এঙ্গেলে এডজাস্ট করে রাখা। সঠিক এঙ্গেলে এডজাস্ট করলে হয়ত আপনার দৃষ্টি সীমার মধ্যে সবকিছুই চলে আসবে না, কিন্তু আপনার ব্লাইন্ডস্পটের এরিয়ার পরিমাণ যতটা সম্ভব কমানো যাবে। ফলে আপনার ব্লাইন্ড স্পটে কোন গাড়ি বা মানুষ বা জীবজন্তু চলে এলেও আপনি কিছুটা যেন দেখতে পান। 

কোন কোন গাড়িতে এডভান্স টেকনোলজির মাধ্যমে ব্লাইন্ড স্পট ডিটেক্টর লাগানো থাকে। এই সিস্টেমের মাধ্যমে কোন কিছু যদি গাড়ির ব্লাইন্ডস্পটের মধ্যে চলে আসে তাহলে ড্রাইভারকে সংকেত দেয়। যদিও এই সিস্টেম অনেক বেশি সতর্ক থাকতে সাহায্য করে, তাও শুধুমাত্র এই সিস্টেমের উপরে নির্ভরশীল থাকা উচিৎ নয়। অন্যান্য যেসব পদ্ধতি আছে সেসবও মেনে চলা উচিৎ।

দুর্ঘটনা এড়াতে ব্লাইন্ড স্পট এড়িয়ে ড্রাইভ করুন

অন্য গাড়ির ব্লাইন্ড স্পট থেকে নিজেকে কীভাবে রক্ষা করবেন?

  • রাতে তো বটেই, দিনের বেলা আলোর স্বল্পতা থাকলে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করবেন যাতে আশেপাশের যানবাহন আপনার যানবাহন দেখতে পারে। 
  • আপনার সামনের, পেছনের ও দুই পাশের গাড়ি থেকে দুরত্ব বজায় রেখে ড্রাইভ করুন। সামনের গাড়ি থেকে কম পক্ষে ৩ সেকেন্ড দূরত্ব বজায় রেখে ড্রাইভ করবেন। আর কোন গাড়ির খুব কাছ দিয়ে ড্রাইভ করবেন না বা টার্ন করবেন না। 
  • ক্ষেত্র বিশেষে যদি আপনি কোন গাড়ির ব্লাইন্ডস্পটে চলেও যান, তাহলে অবশ্যই হর্ন দিয়ে ওই গাড়ির চালকের মনোযোগ আকর্ষণের চেস্টা করুন। 
  • ডানে বা বামে টার্ন নেয়ার সময়ে অবশ্যই টার্নিং সিগন্যাল অন করে টার্ন নেবেন। টার্ন নেয়া হয়ে গেলে সিগন্যাল লাইট অফ করবেন। 
  • আপনার পাশ দিয়ে কোন গাড়ি চলে গেলে, সেই গাড়ির দিকে না তাকিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালান। কেননা আপনি সেই গাড়ির দিকে তাকালে আপনার গাড়িও সেই গাড়ির দিকে চেপে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। 
  • রাস্তার এমন লেন ব্যবহার করবেন যেই লেনে থাকলে আপনি আপনার আশেপাশের গাড়ি ভালোভাবে দেখতে পাবেন এবং আপনার আশেপাশের গাড়িগুলো যেন আপনাকে ভালোভাবে দেখতে পায়। 
  • কোন গাড়ি ওভারটেক করার সময় দুই সাইডের মিররের দিকে লক্ষ্য রাখবেন। 
  • বাইকের জন্য ব্লাইন্ড স্পট মিরর পাওয়া যায়, এরকম মিরর কিনে সেট করে নিতে পারেন।

আপনার গাড়ির ব্লাইন্ড স্পটে যেন কেউ হুট করে ঢুকে না পড়ে, সেজন্য গাড়ির পেছনেওয়ার্নিং স্টিকারও লাগিয়ে নিতে পারেন। স্টিকার দেখে রাস্তায় চলন্ত গাড়িগুলো ড্রাইভ করতে সচেতন হবে। দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও কমে যাবে।

গাড়ির নিরাপত্তায় ফাইন্ডার সম্পর্কে জানতে