আমরা অনেকেই গাড়ি কিনে হাঁফ ছেড়ে বেঁচে যাই। আবার অনেকেই শখের গাড়িটার জন্য টুকিটাকি অনেক গ্যাজেটে কিনেও থাকি। কেউ আবার বাড়তি খরচের কথা ভেবে কিনতে চাই না। গ্যাজেট কেনার ব্যাপারটা এড়িয়ে যাই। তবে একটা জায়গায় আমরা সবাই কনসার্ন থাকি। গাড়ির সেফটি। আমরা কেউই চাই না আমাদের গাড়িটা কোন দুর্ঘটনা, চুরি কিংবা বিপদে পড়ুক। তাই গাড়িতে যদি আগাম কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখি তাহলে সেগুলো সহজেই এড়ানো সম্ভব হয়। আজকে সেরকম কিছু সেফটি গ্যাজেট নিয়েই আলোচনা করব।
১. ড্যাশক্যাম (Dash Cam)
– যেকোনো দুর্ঘটনায় ভিডিও প্রমাণ পেয়ে যাবেন।
– ফেক এক্সিডেন্ট বা মিথ্যা অভিযোগ এড়াতে পারবেন।
– সহজে ও দ্রুত Insurance ক্লেইম সাপোর্ট পাবেন।
– গাড়ি পার্কিং এ থাকলেও নজরে থাকবে।
– চালকের আচরণ ও ড্রাইভিং স্টাইল পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
২. টায়ার প্রেসার মনিটরিং সিস্টেম (TPMS)
– TPMS স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রেসার কমে গেলে সতর্ক করে, ফলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমে যায়।
– টায়ার প্রেসার ঠিক থাকলে গাড়ি চলাচলের সময় নিয়ন্ত্রণ বাড়ে, ব্রেক ভালো কাজ করে আর ফুয়েল খরচ কমে।
– ড্রাইভারকে আলাদা করে টায়ার চেক করতে হবে না।
– সঠিক মনিটরিং-এ টায়ারের আয়ু বাড়ে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমে।
৩. ব্লাইন্ড স্পট মনিটর (Blind Spot Monitor)
– ব্লাইন্ড স্পটে থাকা গাড়ি বা বাইক শনাক্ত করে দুর্ঘটনা এড়াতে সাহায্য করে।
– পাশের লেনে গাড়ি থাকলে ড্রাইভারকে ভিজ্যুয়াল বা অডিও সতর্কবার্তা দেয়।
– হাইওয়েতে দ্রুতগামী যানবাহনের কারণে ব্লাইন্ড স্পটে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমায়।
৪. জরুরি রেসকিউ বা ইমার্জেন্সি কিট (Emergency Kit)
– ফার্স্ট এইড কিট দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্তদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে সাহায্য করে।
– টায়ার পাংচার, ব্যাটারি নষ্ট বা অন্যান্য সমস্যা হলে প্রাথমিক মেরামতের উপকরণ কাজে লাগে।
– টর্চ, রিফ্লেক্টর বা হ্যাজার্ড ট্রায়াঙ্গল অন্ধকারে অন্য গাড়িকে সতর্ক করে।
৫. GPS ট্র্যাকার (Vehicle Tracking Device)
– গাড়ির রিয়েল-টাইম লোকেশন, গতিবিধি দেখা যায়।
– চুরি বা দুর্ঘটনার সময় দ্রুত অনুসন্ধান ও উদ্ধার সম্ভব হয়।
– ওভারস্পিডে গাড়ি চললে অ্যালার্ট দেয় ফলে দুর্ঘটনার প্রবণতা কমে।
– অপ্রয়োজনীয় রুট ও সময় কমিয়ে জ্বালানি সাশ্রয় সম্ভব হয়।
– গাড়ির সাথে 24/7 কানেক্ট থাকা যায়।
কেন এই গ্যাজেটগুলো গুরুত্বপূর্ণ?
– গাড়ি সুরক্ষিত থাকে এবং নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।
– দুর্ঘটনা ও চুরির ক্ষেত্রে প্রমাণ থাকে রেকর্ড(record) হিসেবে।
– দীর্ঘমেয়াদে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও ফুয়েল খরচ কম হয়।
– ইমার্জেন্সি পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করে।
গ্যাজেট কেনার আগে কিছু সতর্কতাঃ
– ভালো ব্র্যান্ডের এবং উন্নত মানের গ্যাজেট নিন।
– ইন্সটলেশন(installation) এবং আফটার সেলস সার্ভিস থাকবে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন।
– গ্যাজেটের ওয়ারেন্টি, সার্ভিস এসব ভালোভাবে দেখে নিন।
– কম টাকায় মানহীন ডিভাইস নিয়ে গাড়ির ক্ষতি করবেন না।
গাড়ি কেনার পর সেফটি গ্যাজেটকে বিলাসিতা ভেবে এড়িয়ে গেলে তা হতে পারে মারাত্মক ভুল। এই ছোট ছোট জিনিসগুলোই আপনার গাড়ির সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার কাজে আসবে। আপনার গাড়ির সার্বক্ষণিক সেফটি(safety) সঙ্গী হবে।